ডেস্ক নিউজ : করোনা সংক্রমণ রোধে আজ শনিবার থেকে রাজধানী ঢাকার ওয়ারী এলাকা ২১ দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে। এই লকডাউন বলবৎ থাকবে আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত। এই ২১ দিন শুধু ওষুধ ও জরুরি পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে।
আজ শনিবার ভোর ৬টা থেকে ওয়ারীর এই লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। এ সময়ে সেখানে স্বাভাবিক জীবনযাপনে থাকবে কড়াকড়ি, যা চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের টিপু সুলতান রোড, জাহাঙ্গীর রোড, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন) আউটার রোড এবং ইনার রোড হিসেবে লারমিনি রোড, হরে রোড, ওয়ার রোড, র্যানকিন রোড এবং নওয়াব রোড লকডাউনের আওতায় রয়েছে।
অবরুদ্ধ ‘রেড জোন’ ওয়ারীতে এই ২১ দিন থাকবে সাধারণ ছুটি। এলাকার সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-কারখানা বন্ধ থাকবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যাঁরা এ এলাকায় বসবাস করেন, তাঁরাও থাকবেন ছুটির আওতায়। দোকানপাট, বিপণিবিতান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে, খোলা থাকবে শুধু ওষুধের দোকান।
লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রয়েছে সেনাবাহিনীর টহল। এ ছাড়া এলাকার ভেতরে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বলধা গার্ডেনের কাছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে।
ডিএসসিসি ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো জানিয়েছেন, লকডাউনের জন্য সব প্রস্তুতি আগেই শেষ করা হয়েছে। আজ ভোরে সেটি কার্যকর করা হয়।
তিনি জানান, লকডাউনের আওতাধীন ১৭টি রোডের মধ্যে ১৫টি রোড ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু দুটি রোড খোলা থাকবে। যে দুটি রোড খোলা থাকবে এগুলো হলো টিপু সুলতান রোডের র্যানকিন স্ট্রিটের দিকে এবং ফোল্ডার স্ট্রিটের হট কেকের পাশে ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের দিকের রাস্তা।
লকডাউন বাস্তবায়নে জনগণকে সচেতন করতে কয়েক দিন ধরে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এখানে তিন শিফটে ১০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। এ ছাড়া করোনা টেস্টের জন্য দুটি বুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক ডাক্তার চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাবেন এবং মুমূর্ষু রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে ৩০ জুন লকডাউন বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি বৈঠক শেষে নগর ভবনে ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের জানান, ৪ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর ওয়ারী এলাকা লকডাউন করা হবে। এ সময় সবকিছু বন্ধ থাকবে। তবে চলাচলের জন্য দুটি সড়ক খোলা থাকবে। এ সময় লকডাউন এলাকায় করোনা নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য জরুরি সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি জানিয়েছিলেন, লকডাউন এলাকায় নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেটা দেওয়া হবে। শুধু ওষুধ, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। তা ছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী ই-কমার্সের মাধ্যমে মীনাবাজার, স্বপ্নসহ অন্যরা সরবরাহ করবে। সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। সেখানে করোনার নমুনা সংগ্রহ বুথ থাকবে। তা ছাড়া ডিএসসিসির মহানগর জেনারেল হাসপাতালকে কার্যকর করে আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।